· যে
যুগে মানুষ পাথরের তৈরী অস্ত্রশস্ত্র ও জিনিসপত্র দিয়ে নানা কাজ চালাত,
তাকে প্রস্তর যুগ বলা হয়। আর মানব সভ্যতার ঊষালগ্নকে পুরাতন
প্রস্তর যুগ বলা হয়। এই যুগের বিভিন্ন দিক হলো
(১)
হাতিয়ারঃ এই সময়
হাতিয়ারগুলি পাথর দিয়ে তৈরী হলেও সেগুলি মসৃণ ছিল না। অধিকাংশ হাতিয়ার তৈরি
হত বড় বড় নুড়ি দিয়ে।
কোপানি, হাত-কুঠার ইত্যাদির ব্যবহারও এই সময় করা হত বলে
মনে করা হয়। পাথর ছাড়া কাঠের হাতিয়ার নির্মাণ হত। হাত-কুঠার, নানা ধরণের কাটারি প্রভৃতি ছোটো ও মাঝারি মাপের হাতিয়ার , ত্রিভুজ ও বহুভুজাকার হাতিয়ারগুলি সৃষ্টি হয়েছিল।
২)
খাদ্যাভাস: এই সময় মানুষ ফলমূল সংগ্রহ করে খাদ্য
হিসাবে সেগুলি খেত। এছাড়া তারা পশুদের শিকার করে খেত।
৩)
বাসস্থানঃ প্রাচীন প্রস্তর যুগের প্রথম দিকে আদিম
মানুষ খোলা আকাশের নীচে বসবাস করত। পরবর্তীকালে তারা গুহার ভেতরে বা পাহাড়ের
ঝুলন্ত পাথরের নিচে বসবাস করত। পরবর্তীকালে তারা গাছের ডালপালা,
লতাপাতা, পশুর চামড়া প্রভৃতি দিয়ে
তাদের আস্তানা তৈরী করত।
৪) বস্ত্র- এই সময় মানুষদের প্রথাগত বস্ত্র ছিল না। তবে ধীরে ধীরে তারা লজ্জা নিবারণ এবং শীতের হাত থেকে নিজেদের শরীরকে রক্ষা করতে পশুদের চামড়া এবং গাছের ছালের ব্যবহার করতে শুরু করে।
৫) শিল্প- এই যুগে শিল্পচর্চা খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না। তবে গুহাগুলির গাত্রে চিত্রের ব্যবহার কিছু কিছু স্থানে শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়। তবে সেগুলি বেশিরভাগই জীবজন্তুর ছবি ছিল।
৬)
অন্ত্যোষ্টি ক্রিয়াঃ প্রাচীন প্রস্তুর যুগে
মৃতদেহকে কবর দেওয়ার রীতি শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়। কবরের সঙ্গে নানাপ্রকার
প্রয়োজনীয় দ্রব্য মৃতদেহের সঙ্গে দেওয়া হত। বড় আকারের পাথর চাপা দিয়ে এবং
পাথরের থাম ও ফলক বেষ্টিত করে যে কবর দেওয়ার রীতি এ সময় চালু ছিল তা ‘মেগালিথ
সংস্কৃতি'
নামে পরিচিত ছিল।
৭)
ভাষার উদ্ভবঃ প্রাচীন প্রস্তর যুগে একই গোষ্ঠীর
মানুষেরা একসঙ্গে বসবাসের সময় নিজেদের মধ্যে শব্দের মাধ্যমে ভাবের আদানপ্রদান করত। এভাবেই ভাষার সৃষ্টি হয়েছিল।
৮)
ধর্ম বিশ্বাস ও সামাজিক শ্রেণিবিভাগ-
প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষেরা প্রাকৃতিক শক্তিগুলিকে দেবতারূপে মানতে শুরু করে।
No comments:
Post a Comment